সুনামগঞ্জ , বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
মহান বিজয় দিবস উদযাপিত: নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় বিজয় দিবসে একাই ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানালেন সাবেক মেয়র নাদের বখত আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে : জেলা জামায়াত আমীর দেড় কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ দুর্নীতির প্রতিবাদ করলেই ক্যাডারের মতো হুমকি দেন সালাম নিয়ম রক্ষায় ‘লোকদেখানো’ উদ্বোধন নির্ধারিত দিনে শুরু হলো না বাঁধের কাজ চিরগৌরবে সমুজ্জ্বল মহান বিজয় দিবস আজ কর্মজীবনের সবখানেই রেখে এসেছেন দুর্নীতির অমোচনীয় চিহ্ন জামালগঞ্জে নাশকতার মামলায় মৎস্যজীবি লীগ আহ্বায়ক সফিক গ্রেফতার বিনম্র শ্রদ্ধায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ প্রকল্প কাজের সাইনবোর্ডে মূল্য সংযোজন কর ও আয়কর কর্তনের বিষয় উল্লেখ রাখার দাবি শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করবে কে? আ.লীগ নেতা মিসবাহকে কুপিয়ে জখম, মুক্তিপণের বিনিময়ে মুক্তি দোয়ারাবাজারে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেফতার ৪ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দুই মেরুতে বিএনপি-জামায়াত দিনমজুরের জমি দখল করে প্রভাবশালীর ঘর নির্মাণের অভিযোগ অন্তর্বর্তী সরকার উন্নত, সমৃদ্ধ ও সুশাসিত দেশ গঠনে অঙ্গীকারবদ্ধ : প্রধান উপদেষ্টা সঠিক নিয়মে বাঁধের কাজ করার তাগিদ শান্তিগঞ্জে ট্রাক চাপায় যুবক নিহত এসএসসি ব্যাচ ৮৬ মিলন মেলা ও গুণীজন সংবর্ধনা

জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দুই মেরুতে বিএনপি-জামায়াত

  • আপলোড সময় : ১৪-১২-২০২৪ ০৯:০৮:৫৫ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৪-১২-২০২৪ ০৯:০৮:৫৫ পূর্বাহ্ন
জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দুই মেরুতে বিএনপি-জামায়াত
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক :: নির্বাচন নিয়ে বিএনপি ও তার মিত্র জামায়াতে ইসলামী পর¯পরবিরোধী অবস্থানে রয়েছে। বিএনপি দ্রুত সংসদ নির্বাচনের তাগিদ দিলেও তাড়াহুড়ো চায় না জামায়াত। গত ৫ আগস্টের পর রাজনীতির মাঠে বিএনপির সঙ্গে নানা কারণে জামায়াতের দূরত্ব বাড়ছে। সম্প্রতি বিএনপি যে অবস্থান নিচ্ছে ঠিক তার উল্টো মতামত দিচ্ছে জামায়াত। এমন বৈরী অবস্থানে দুই দলের জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে পড়ছে। জামায়াত ৩০০ আসনে এককভাবে কিংবা ইসলামী জোট করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সম্প্রতি ভোটার তালিকা হালনাগাদে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিএনপি ভোটার তালিকা প্রণয়নে বাড়ি বাড়ি যাওয়ার প্রয়োজন দেখছে না। দলটি প্রযুক্তির মাধ্যমে তালিকা আপগ্রেড করার পরামর্শ দেয়। বিএনপির এই মতের উল্টো মত দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। গত বুধবার সংসদীয় আসনের পুনর্বিন্যাস এবং ভোটার তালিকা হালনাগাদে নির্বাচন কমিশনকে যৌক্তিক সময় দেওয়ার কথা বলেছেন জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান। তার মতে, যে যুব সমাজের মাধ্যমে দেশে পরিবর্তন এসেছে, তাদের সবাইকে অবশ্যই এবার ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন হচ্ছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা। ‘আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন’, ‘নির্বাচন নিয়ে তাড়াহুড়ো নয়’ - তিন মাস ধরে জামায়াতে ইসলামীর নেতারা এমন কথা বলে এলেও নভেম্বরের শেষে দলটির নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান ‘যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার শেষ করে’ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিলেন। গত ২৯ নভেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দলের এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, আমি বর্তমান উপদেষ্টা সরকারকে বলব, আপনারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংস্কার কাজ শেষ করে তারপরে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। এটা যদি না হয়, তাহলে এ নির্বাচন তো নির্বাচন হবে না। তার দুই সপ্তাহের মাথায় জামায়াত আমির শফিকুর রহমান নির্বাচনের জন্য সরকারকে যৌক্তিক সময় দেওয়ার কথা বললেন। এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, জামায়াত একবার বলে সংস্কার দরকার, আবার বলে নির্বাচন দরকার। একেকবার একেক কথা বলছে। তারা আসলে ফাইনালি কী চায়-তা বোঝা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার হালনাগাদের পরিবর্তে মেশিনে করতে বলেছি। জামায়াত বাড়ি বাড়ি হালনাগাদের পক্ষে। এটা বাদানুবাদ তৈরি করছে কি না, এ নিয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা করা যাবে না। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা বাড়ি বাড়ি হালনাগাদের বিপক্ষে। এর যৌক্তিক কারণও তুলে ধরেছি। গণতান্ত্রিক চর্চায় যে কোনো রাজনৈতিক দল ভিন্নমত পোষণ করতেই পারে। এখন সরকার কী বলে সেটাই দেখার বিষয়। কোনো রাজনৈতিক দলের কাউন্টারে কিছু বলতে চাই না। স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আমি জামায়াত স¤পর্কে কোনো কথাই বলতে চাই না। জামায়াতের দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, ৫ আগস্টের পর নানা বিষয় নিয়ে বিএনপির সঙ্গে দ্বন্দ্ব বাড়ছে জামায়াতের। প্রথমত নির্বাচন ও সংস্কার ইস্যুতে। নির্বাচন নিয়ে জামায়াত তাড়াহুড়ো করতে চায় না। তারা সরকারকে নির্বাচন নিয়ে কোনো চাপ দিতে চায় না। সংস্কারকে গুরুত্ব দিতে চায়। তারা মনে করছে অরাজনৈতিক সরকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করে দিয়ে গেলে তা টেকসই হবে। কেননা রাজনৈতিক সরকার তাদের নিজেদের সুবিধামতো সংস্কার করে থাকে। এ ছাড়া মাঠ পর্যায়ে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন জায়গায় জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি মুখোমুখি পর্যায়ে রয়েছে। জামায়াতের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বিএনপির কর্মকা-ে বিরক্ত উল্লেখ করে জামায়াতের ঢাকা দক্ষিণের একজন নেতা বলেন, এটা অস্বীকারের সুযোগ নেই বিএনপির সঙ্গে আমাদের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন ইস্যুতে বিভক্তি ¯পষ্ট হয়েছে। আন্দোলনের শুরু থেকে ছিল সেটি ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর আরও বেড়েছে। বিএনপি ৫ আগস্টের পর ধরেই নিয়েছে তারাই ক্ষমতায় আসবে। ক্ষমতায় আসার আগেই বিএনপি বিভিন্ন এলাকায় কর্তৃত্ব চালাচ্ছে। অনেক জায়গায় জামায়াতকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে। আমরাও বিএনপিকে ফাইট দেওয়ার চেষ্টা করছি। জামায়াতের এই নেতা মনে করেন, আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে রাজনীতির মাঠে এখন বিএনপি প্রধান ও প্রথম দল। পরের অবস্থানে আছে জামায়াত। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে জামায়াত বিরোধী দল হবে। এবারের নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের জোট হবে না এটা অনেকটা নিশ্চিত। এবার মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এককভাবে নির্বাচনের পক্ষে। সাধারণ মানুষও বলছে ইসলামি দলগুলোর এবার এক ছায়াতলে এসে নির্বাচন করা উচিত। আর জোট গেলে বিএনপি বড়জোর ৪০টি আসন দিতে পারে। এরচেয়ে বরং এককভাবে নির্বাচন করলে সংগঠনের রাজনৈতিক স্বকীয়তা বজায় থাকবে। সাংগঠনিক শক্তিমত্তা ও জনসমর্থন দেখার সুযোগ সৃষ্টি হবে। আমরা বিএনপিকে প্রতিপক্ষ ভাবছি না তবে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেই এগোচ্ছি। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের সম্প্রতি বলেছেন, দেশের মানুষ তিনটি রাজনৈতিক দলের শাসন দেখেছে, কিন্তু তাদের শাসনে শান্তি পায়নি। জনগণ জামায়াতকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় দেখতে চায় এবং ইসলামি শাসন ব্যবস্থার প্রকৃত কার্যকারিতা দেখতে চায়। প্রায় একই কথা বলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিনের দুঃশাসনের পর দেশের মানুষ এখন শান্তি ও স্বস্তি চায়। তারা জামায়াতে ইসলামীকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। কারণ মানুষ জানে, জামায়াতে ইসলামীই পারবে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে। জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রচার স¤পাদক মতিউর রহমান আকন্দ সম্প্রতি বলেন, আমরা এখন সংগঠন শক্তিশালী করতে পুরোদমে সাংগঠনিক কাজে ব্যস্ত। প্রতিটি এলাকায় এলাকায় গণযোগাযোগ শুরু হয়েছে। মানুষের কাছাকাছি যাচ্ছেন দলের নেতাকর্মীরা। তারা জনগণের বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়াচ্ছে। দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, আমরা যেভাবে সর্বোচ্চ রেজাল্ট করতে পারি-সেভাবেই নির্বাচনে অংশ নেব। সেটা জোটেও হতে পারে, এককভাবেও হতে পারে। পরিস্থিতি দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিএনপির সঙ্গে আমরা সম্পর্ক খারাপ করিনি। বিএনপিও বলেছে জামায়াত তাদের জোটে নেই। আমরা তো কিছু বলিনি। এ প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনের জন্য তাড়াহুড়ো করছে না, তবে কালক্ষেপণও চায় না। যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দিতে হবে। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন দিলে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন হবে না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে যতটা স¤পর্ক থাকা উচিত ততটাই আছে বিএনপির সঙ্গে। -সময়ের আলো

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স